কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে

আপনার যদি জলাতঙ্ক রোগ হয় তাহলে কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? এটি বুঝার জন্য বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যদি জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? সে সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নেওয়া জরুরী। এই আর্টিকেলে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? তা নিয়ে আলোচনা করব।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? তা জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে

কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছেঃ ভূমিকা

জলাতঙ্ক হল এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। সাধারণত এই ভাইরাস গুলো প্রাণী দ্বারা মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। যাদের কোন ধরনের প্রাণী কামড়েছে সাধারণত তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা না নিলে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। প্রাণী কামড় দেওয়ার এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে থাকবে।

আরো পড়ুনঃ ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য কোন ফল ভালো

এই অবস্থায় কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? সেই লক্ষণগুলো সম্পর্কে আপনার জেনে নেওয়া উচিত। জলাতঙ্ক রোগ কি ছোঁয়াচে? জলাতঙ্ক প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আশা করি জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন।

জলাতঙ্ক রোগ কি ছোঁয়াচে

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে জলাতঙ্ক রোগ কি ছোঁয়াচে? তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি জলাতঙ্ক রোগ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। এক ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ সাধারণত এটি। রেবিজ ভাইরাস নামক এক ধরনের ভাইরাস এর কারণে জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে। এ রোগ সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী ও বন্যপ্রাণীদের মধ্যে প্রথম সংক্রমিত হয়।

এরপরে মানুষ এই সংক্রমিত প্রাণী গুলোর বা এদের লালার সংস্পর্শে আসলে অথবা এই প্রাণীগুলি যতই মানুষকে কামড় অথবা আছড়ে দেই তাহলে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাস সাধারণত রেবিজ দ্বারা আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড় ও লালার মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। রেবিজ ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত প্রাণীর ভাইরাল এনসেফালাইটিস হয় ফলে প্রাণীটি আক্রমণাত্মক হয়ে যায়।

অল্পতেই কামড়িয়ে দেয়। এই ধরনের প্রাণীকে রেবিড প্রাণী বলে। এই ভাইরাস প্রায় সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীকেই আক্রান্ত করতে পারে তবে খুব অল্পসংখ্যক স্তন্যপায়ী মানুষের সংক্রমণের উৎস হিসেবে গুরুত্ব বহন করে। মানুষ সাধারণত কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে বেশি আক্রান্ত হয়। অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে বিড়াল, বাদুড়, শেয়াল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

সাধারণত খরগোশ ও তীক্ষ্ণদন্তী প্রাণী যেমন, ইঁদুর, মূষিক, কাঠবিড়াল প্রভৃতির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় না। আক্রান্ত প্রাণীর লালা অথবা কামড়ের কারণে মানুষের মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে মানুষের জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে।

জলাতঙ্ক রোগ বোঝার উপায়

জলাতঙ্ক রোগ একটি মারাত্মক রোগ তাই কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? এর লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া জরুরী। আমরা যদি প্রথম অবস্থায় লক্ষণ গুলো জেনে এ রোগ নির্ণয় করে প্রথমে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করে দেয় তাহলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সাধারণত বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো এ রোগের আগে প্রকাশ পায়।

১। প্রথমদিকে অনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ যেমন জ্বর, ক্ষুধামন্দা লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সাধারণত প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে এগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে।

২। কামড় স্থানের অনুভূতিতে পরিবর্তন যেমন চিনচিন, ঝিনঝিন ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়।

৩। এর পরে কিছুদিন পর থেকে তন্দ্রা, কনফিউশন,অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা, লালারসের ক্ষরণ বৃদ্ধি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।

আরো পড়ুনঃ ত্বকের কোন কাজে গ্লিসারিন লাগে

৪। অত্যাধিক লালা নিঃসরণ, গিলতে অসুবিধা সাধারণত গিলতে অসুবিধার কারণে পানির ভয়, বেশি উদ্বেগ এবং বিভ্রান্তি এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে।

৫। সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে ঢোক গিলার সময় ডায়াফ্রাম, রেসপিরেটোরি মাসল ও কণ্ঠনালির তীব্র ব্যথাযুক্ত সংকোচন হয় বিশেষ করে পানি পান করার চেষ্টা করলে ডায়াফ্রাম ও অন্যান্য ইন্সপিরেটোরি মাসলের তীব্র সংকোচন ও ব্যথা হয় ফলে রোগীর মধ্য হাইড্রোফোবিয়া বা পানভীতি তৈরি হয়।

৬। জলাতঙ্ক একটি নির্দিষ্ট পিরিয়ড থাকে যার অর্থ উপসর্গ ও লক্ষণগুলো প্রকাশের আগে কিছুদিন এটি ব্যক্তির শরীরে সুপ্ত থাকে। প্রাথমিক উপসর্গগুলো যেমন মাথাব্যথা গলাব্যথা জ্বর এবং কামড়ের স্থানে খিচুনি হওয়া এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।

জলাতঙ্ক প্রতিরোধের উপায়

জলাতঙ্ক রোগ বোঝার জন্য নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাই। আপনাকে যদি কোন কারণে কোন প্রাণী কামড় দিয়ে থাকে তাহলে কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? তার জন্য আপনার লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলাতঙ্ক প্রতিরোধের উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো।

এই রোগ প্রতিরোধের উপায় হলো টিকা নেওয়া। এই ভাইরাসের অনেকরকম টিকা আবিষ্কার হয়েছে তবে সবচেয়ে নিরাপদ টিকা হলো হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন। অন্যান্য টিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পিউরিফাইড চিক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন, নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন ইত্যাদি।

ডাক সেল ভ্যাকসিনের ইমিউনোজেনেসিটি বা কার্যকারিতা কম এবং নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন অ্যালার্জিক এনসেফালোমায়েলাইটিস করতে পারে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে টিকা নেওয়া কে প্রি-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস ও আক্রান্ত হওয়ার পরে টিকা নেওয়া কে পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সিস বলে।

কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছেঃ উপসংহার

কিভাবে বুঝবেন আপনার জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? জলাতঙ্ক রোগ কি ছোঁয়াচে? জলাতঙ্ক প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জলাতঙ্ক রোগ মারাত্মক একটি রোগ তাই বিষয়গুলো জেনে নেওয়া খুবই জরুরী। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। বিষয়গুলো আপনাদের জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

আরো পড়ুনঃ নতুন চুল গজাতে কতদিন সময় লাগে

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।২০৮৭৬

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url