কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী
কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী? তা বুঝার জন্য অবশ্যই আপনাকে ফিস্টুলা রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে। কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী? তা জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। আসুন দেখে নেই কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী?
পেজ সূচিপত্র: কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী
কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী
ফিস্টুলা রোগের লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, আপনি আক্রান্ত ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। অর্থাৎ ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা জানার জন্য আপনাকে ফিস্টুলা রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে। আর্টিকেলটির এই অংশে ফিস্টুলা রোগের লক্ষণসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আসুন তাহলে দেখে নেই, কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী?
- মলদ্বারের চারপাশে চুলকানো: মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি হওয়া ফিস্টুলা রোগের অন্যতম একটি কারণ। তাই যদি মলদ্বারের আশেপাশে দীর্ঘদিন থেকে চুলকানির সমস্যা থাকে তাহলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কেননা হতে পারে তা ফিস্টুলা রোগের কারণে হয়েছে।
- হাঁটা চলার সময়, বসলে এবং মলত্যাগের সময় মলদ্বারে প্রচন্ড ব্যথা হওয়া: ফিস্টুলা রোগের অন্যতম আরেকটি লক্ষণ হলো বসার সময়, হাটাহাটি করার সময় অথবা মলত্যাগ করার সময় মলদ্বারে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হওয়া। আর তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে পরীক্ষা করে নিতে হবে যে, আপনার ফিস্টুলা রোগ হয়েছে কিনা?
- মলদ্বারের পাশ দিয়ে গন্ধযুক্ত স্রাব নির্গত হওয়া: ফিস্টুলা রোগের সবচেয়ে কমন এবং বড় লক্ষণ হলো মলদ্বারের পাশ দিয়ে গন্ধযুক্ত স্রাব নির্গত হওয়া। যদি এই ধরনের কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনার ফিস্টুলা রোগ হয়েছে। ফিস্টুলা হলে মলদ্বার দিয়ে রক্ত, পুঁজ, বা অন্য কোন দুর্গন্ধ যুক্ত স্রাব নির্গত হয়।
- পায়খানা করার সময় পুঁজ বা রক্ত বের হওয়া: পায়খানা করার সময় মলের সাথে যদি রক্ত কিংবা পুঁজ নির্গত হয়, তাহলে তা হতে পারে ফিস্টুলা রোগের কারণে। কেননা এই ধরনের সমস্যার সাধারণত ফিস্টুলা রোগের কারণেই হয়ে থাকে।
- মলদ্বারের পাশে বড় ধরনের লাল রঙের ফোড়া ওঠা: ফিস্টুলা রোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো: মলদ্বারের পাশে বড় ধরনের লাল রঙের ফোড়া ওঠা। পাশ্চাতদেশে ফোড়া ওঠার মাধ্যমেই মূলত ফিস্টুলা রোগের সূচনা হয়ে থাকে। অর্থাৎ মলদ্বারের পাশের নালীগুলোতে ফোড়ার কারণে ঘা হয়ে তা ফিস্টুলা রোগের তৈরি করে।
- প্রস্রাব পায়খানার উপরে নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া: ফিস্টুলা রোগের আক্রান্ত হলে প্রস্রাব পায়খানার উপরে নিয়ন্ত্রণ কমে যেতে পারে। শুধু তাই নয় প্রস্রাব পায়খানার উপরে একেবারে নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে। সুতরাং ফিস্টুলা রোগের অন্যতম আরেকটি লক্ষণ হলো প্রস্রাব পায়খানার উপরে নিয়ন্ত্রণ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হওয়া।
ফিস্টুলা রোগ হলে কী করা উচিত
ফিস্টুলা রোগ হলে বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। আপনি নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনে না চলেন তাহলে কিন্তু দিনে দিনে ফিস্টুলা রোগ আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখবেন, ফিস্টুলা রোগ কখনোই এমনি এমনি সেরে ওঠেনা। ফিস্টুলা হলে অবশ্যই আপনাকে তার চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করতে হবে।
যাই হোক, হোক ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হলে আপনাকে নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করতে হবে। এতে করে খুব দ্রুত ফিস্টুলা রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আসুন দেখে নেয়া যাক, ফিস্টুলা রোগ হলে কী করা উচিত, সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী? সে বিষয় সম্পর্কে ইতোমধ্যে উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
- আক্রান্ত স্থান গরম পানি দিয়ে দিনে তিন চারবার পরিষ্কার করুন: ফিস্টুলা রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে চাইলে প্রতিদিন আপনাকে আক্রান্ত স্থান গরম পানি দিয়ে তিন থেকে চারবার ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এভাবে নিয়মিত পরিস্কার করলে আরাম পাবেন। ঔষধ সেবন করার পাশাপাশি এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যেই সুস্থ হতে পারবেন।
- পাশ্চাতদেশে প্যাড ব্যবহার করতে পারেন: ফিস্টুলার প্রকোপ যদি অতিমাত্রায় প্রকাশ পায়। অর্থাৎ অনবরত যদি দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব ঝরতে থাকে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এনাল প্যাড ব্যবহার করতে হবে। কেননা, আপনি যদি এনাল প্যাড ব্যবহার না করেন তাহলে আপনার কাপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।
- অধিক পরিশ্রমের কাজ এবং ভার উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকা: আপনি যদি ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সব ধরনের পরিশ্রমের কাজ পরিহার করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা যাবে না। এবং সম্পূর্ণ রেস্টে থাকতে হবে।
- উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করা: উচ্চব ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে তা আপনার ফিস্টুলা রোগ নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তাই ফিস্টুলা রোগ থেকে মুক্তি পেতে উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করা: আপনি যদি ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে যা আপনার ফিস্টুলা রোগের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পেট নরম রাখুন।
- মল নরম করার ঔষধ সেবন করা: মল যদি অধিক পরিমাণে শক্ত হয় তাহলে তা ফিস্টুলা রোগীদের জন্য মারাত্মক কষ্টের কারণ। তাই সর্বদা আপনাকে মল নরম রাখতে হবে। যদি স্বাভাবিকভাবে মল নরম রাখা না যায় তাহলে আপনাকে মল নরম করার ঔষধ সেবন করতে হবে।
ফিস্টুলা রোগ নিরাময়ের উপায় কি
ফিস্টুলা রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে হবে। নিচে উল্লেখিত ফিস্টুলা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সমূহ যদি আপনি অবলম্বন করেন তাহলে আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যে ভালো ফলাফল পাবেন। ফিস্টুলা রোগ নিরাময়ের উপায় কি? বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
- স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন।
- অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা পরিত্যাগ করুন।
- অধিক মসলাযুক্ত খাবার পরিত্যাগ করুন।
- অত্যধিক পরিমাণে ক্যাফেইন রয়েছে পানীয় পরিহার করুন।
- অ্যালকোহল পরিহার করুন।
- ভাজাপোড়া এবং তেলযুক্ত খাবার পরিত্যাগ করুন।
- প্রস্রাব পায়খানার চাপ আটকিয়ে রাখবেন না।
ফিস্টুলা কি ভগন্দর রোগ
কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী? আশা করি তা জানতে পেরেছেন। কেননা ইতোমধ্যেই উপরে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। যাই হোক, আর্টিকেলটির এই অংশে ফিস্টুলা কি ভগন্দর রোগ কিনা? সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।
অনেকের মানেই এই ধরনের প্রশ্ন থাকে যে, ফিস্টুলা কি ভগন্দর রোগ? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো: হ্যা। ফিস্টুলাই ভগন্দর রোগ। ভগন্দর রোগকে ইংরেজিতে ফিস্টুলা বলা হয়। ফিস্টুলা কি ভগন্দর রোগ কিনা? আশা করি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পারলেন।
শেষ কথা
আপনি যদি প্রথম থেকে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন যে, কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি ফিস্টুলার রোগী? গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার ভালো লেগেছে। যদি এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। এতে করে তারাও ফিস্টুলা রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে। ১৬৪১৩