গলায় ক্যান্সার কেন হয় - কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন

আমরা অনেকেই জানিনা গলায় ক্যান্সার কেন হয়? কিন্তু আমাদের এটা জানা আছে যে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। বেশ কিছু কারণে ক্যান্সার হতে পারে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্যান্সার হয়ে থাকে তার মধ্যে গলা অন্যতম কিন্তু গলায় ক্যান্সার কেন হয়? এ সম্পর্কে আমরা অজানা। এই আর্টিকেলে গলায় ক্যান্সার কেন হয়? তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট গলায় ক্যান্সার কেন হয়? উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ গলায় ক্যান্সার কেন হয় - কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন

গলায় ক্যান্সার কেন হয়?

ক্যান্সার শব্দটি শুনলে আমাদের কলিজা কেঁপে ওঠে। কারণ ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। বেশিরভাগ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর আয়ু-কাল বেশিদিন হয় না। আমাদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় ক্যান্সার আক্রান্ত করতে পারে। নাক কান গলা ইত্যাদি জায়গা গুলোতেও ক্যান্সার হয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত তারা গলায় ক্যান্সার কেন হয়? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই।

আরো পড়ুনঃ সজল নামের অর্থ কি - সজল নামের বিখ্যাত ব্যক্তি

গলায় ক্যান্সার কেন হয় তা উল্লেখ করা হলোঃ

১। তামাক ও মদ্যপান মূলত সকল ধরনের ক্যান্সারের জন্য প্রধান কারণ। কিন্তু আমাদের দেশের জন্য পান সুপারি জর্দা গলার ক্যান্সারের জন্য অনেকটা দায়ী। আমাদের দেশের ৭৫ শতাংশ তামাক এবং তামাক জাত দ্রব্যের কারণে নাক কান গলায় ক্যান্সার হয়ে থাকে।

২। যদি মদ্যপান এর সাথে ধূমপান একসাথে করা হয় তাহলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বহুগুণ বেড়ে যায়।

৩। কেউ যদি অতিরিক্ত রেডিয়েশনে সংস্পর্শে থাকে সবসময় তাহলে তার গলায় ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশ বৃদ্ধি পায়।

৪। অতিরিক্ত ঝাল এবং মশলা জাতীয় খাবার নিয়মিত ভাবে খাওয়ার অভ্যাস থেকে হতে পারে মুখ এবং গলার ক্যান্সার।

৫। আমাদের মধ্যে অনেকের সুপারি চেবানোর অভ্যাস থাকে দীর্ঘক্ষণ সুপারি পাতা গালের মধ্যে ভরে রাখলে এবং এটি চেবাতে থাকলে গলাতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

৬। জেনেটিকস কারণে অর্থাৎ বংশগত কারো যদি ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে তার পরবর্তী বংশধর এর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৭। এছাড়া কিছু প্যাকেটজাত লবণাক্ত খাবার রয়েছে যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে প্যাকেটজাত করা হয় সাধারণত সেগুলো খাওয়ার ফলে গলায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা এবং ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

৮। মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে রক্তশূন্যতায় ভোগা নারীদের ক্ষেত্রে গলায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্যান্য নারীদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পায়।

৯। সবুজ শাকসবজি এবং ভিটামিন সি এজন্য পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ না করলে গলাতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

১০। এসিডিটি সমস্যা হতে খাবার পাকস্থলী থেকে বেরিয়ে আসার রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে এরকম রোগীদের গলায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

গলায় ক্যান্সার হওয়ার কারণ

আপনারা যারা গলার সমস্যা নিয়ে ভুগছেন সাধারণত তাদের জন্য আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি। আমরা যে খাবার খায় সাধারণত সেগুলো গলার মধ্যে দিয়েই আমাদের পেটের ভেতরে প্রবেশ করে। যদি গলায় ক্যান্সার হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তাই আমাদেরকে গলায় ক্যান্সার হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে।

গলায় ক্যান্সার হওয়ার কারণ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • অতিরিক্ত ধূমপান করার ফলে গলায় ক্যান্সার হয়ে থাকে।
  • ধূমপান এর সাথে যদি মদ্যপান করা যায় তাহলে এর ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পায়।
  • পুষ্টিকর খাবার না গ্রহণ করার কারণে।
  • জেনেটিকস অর্থাৎ বংশগত কারণে হতে পারে।
  • অতিরিক্ত সুপারি অথবা পান খাওয়ার জন্য হতে পারে।
  • দীর্ঘদিন প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার ফলে হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ গ্লিসারিন এর উপকারিতা - গরমে গ্লিসারিন এর উপকারিতা

আমরা ইতিমধ্যেই উপরের আলোচনায় গলায় ক্যান্সার কেন হয়? এর কারণ সকলে উল্লেখ করেছি। আপনি যদি গলার ক্যান্সার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এর কারণ সম্পর্কে আগে জানতে হবে। কারণ ক্যান্সার সারানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় এই চিকিৎসা গুলোর জন্য কারণ সম্পর্কে জানার জরুরী।

কিভাবে বুঝবেন আপনার গলায় ক্যান্সার হয়েছে

আপনার যদি গলায় ক্যান্সার হয় তাহলে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার গলায় ক্যান্সার হয়েছে? এর জন্য বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। আপনি যদি সেই লক্ষণগুলো জেনে রাখতে পারেন তাহলে খুব সহজেই কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন অর্থাৎ এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়ে যাবেন। কিভাবে বুঝবেন আপনার গলায় ক্যান্সার হয়েছে? সেই লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া যাক।

গলার ক্যান্সারের লক্ষণ সমূহঃ

  • গলায় ও মুখে ব্যথা করা
  • শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া
  • দাঁতের সমস্যা হওয়া
  • হঠাৎ করে আওয়াজে পরিবর্তন
  • চোয়াল ও জিব্বার সমস্যা
  • দীর্ঘদিন কফ ও কাশি হওয়া

গলায় ও মুখে ব্যথা করা - সাধারণত গলায় ক্যান্সার হলে গলা এবং মুখে অনবরত ব্যাথা হতে থাকে। এই ব্যথা সাত দিনের বেশি সময় ধরে থাকলে আপনাকে বুঝতে হবে এটি গলার ক্যান্সারের একটি লক্ষণ। এছাড়া মুখের ভেতরে সাদা দাগ দেখা দিতে পারে এবং খাবার গিলতে অসুবিধা হতে পারে।

শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া - যদি গলায় ক্যান্সার হয় তখন আমাদের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। কারণ আমাদের শ্বাস যন্ত্রের সাথে গলার একটি সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। যদি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে এটি গলার ক্যান্সারের একটি লক্ষণ।

দাঁতের সমস্যা হওয়া - যদি গলার ক্যান্সার হয় তাহলে অসময়ে দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দাঁত নরম হয়ে যেতে পারে অথবা অনেক সময় দাঁত পড়ে যেতে পারে। যদি এ সমস্যাগুলো হয় তাহলে বুঝতে হবে এটি গলার ক্যান্সারের একটি লক্ষণ।

হঠাৎ করে আওয়াজে পরিবর্তন - হঠাৎ করে গলার আওয়াজ এর পরিবর্তন হওয়া। তবে এটি গলার ক্যান্সারের জন্য হয়েছে এমনটা নয় বিভিন্ন কারণেও হতে পারে। তবে হঠাৎ করে গলার আওয়াজ পরিবর্তন করার ক্যান্সারের কারণে হয়ে থাকে।

চোয়াল ও জিব্বার সমস্যা - গলায় ক্যান্সার হলে সাধারণত মুখের নিচের দিকের চোয়াল নাড়াতে অসুবিধা হয়। জিব্বায় ঘা এবং ক্ষত দেখা দিতে পারে। অনেক সময় জিব্বা থেকে রক্ত পড়তে পারে। যদি উক্ত সমস্যাগুলো দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে এটি গলায় ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ।

দীর্ঘদিন কফ ও কাশি হওয়া - আপনার যদি দীর্ঘদিন ধরে কফ এবং কাশি থাকে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে এটি গলায় ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ। এর পাশাপাশি কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া গলার ক্যান্সারের লক্ষণ। এছাড়া হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া। মুখ ফুলে যাওয়া গলার সঙ্গে কানে ব্যথা হওয়া এগুলো লক্ষণ প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে এটি গলার ক্যান্সার হয়েছে।

কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন

ক্যান্সার মানে মরন ব্যাধি রোগ। সর্বপ্রথমে আমরা গলায় ক্যান্সার কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে জেনেছি। যদি এর কারণ এবং লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে আপনি কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন? এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিন। কারণ গলার ক্যান্সার হলে বেশ কিছু কাজ করা থেকে এবং খাবার খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।

কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন তা জেনে নিনঃ

১। ধূমপান সর্বদা ক্যান্সারের প্রধান কারণ। তাছাড়া তামাক এবং পান মশলা সেবন করলে গলায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে ধূমপান এবং তামাক জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।

২। দীর্ঘদিন ধরে প্যাকেটজাত করা খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। সাধারণত ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম কারণ প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া।

৩। সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন সি এবং পুষ্টিকর খাবার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখতে হবে। এবং ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে হলে উক্ত খাবারগুলো গ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের কোন জেলার মানুষ সুন্দর ভাষায় কথা বলে

৪। অতিরিক্ত পান অথবা সুপারি চেবানো যাবে না। কারণ অতিরিক্ত পান এবং জর্দা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে গলায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সকল খাবার থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।

আমাদের শেষ কথাঃ গলায় ক্যান্সার কেন হয় - কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে গলায় ক্যান্সার কেন হয়? গলায় ক্যান্সার হওয়ার কারণ? কিভাবে বুঝবেন আপনার গলায় ক্যান্সার হয়েছে? কিভাবে গলায় ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাবেন? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। গলায় ক্যান্সার হলে অবশ্যই উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিন। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।২০৭৯১

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url