চোখে শসা দিলে কি হয়

 চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্য। কেননা আজকের এই পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করব চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে। তাহলে চলুন চোখে শসা দিলে কি হয় এ বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন।

চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে আপনাদের জন্য নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর বিলম্ব না করে চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ চোখে শসা দিলে কি হয়

ভূমিকা

শসা আমরা সাধারণত খাই। শসাই অনেক দরকারি ভিটামিন ও খনিজ থাকে। এতে থায়ামিন, রিবোফ্লোবিন, ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর মত উপাদান থাকে। এ ধরনের উপাদান শরীরের জন্য যেমন দরকারি, তেমন দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও কার্যকর। চোখের যত্নে অন্যতম কার্যকর উপাদান হিসেবে মনে করা হয় শসাকে।

আপনারা অনেকেই জানতে চান চোখে শসা দিলে কি হয়। সাধারণত ফেসিয়াল বা রূপচর্চার অংশ হিসেবে অনেকেই চোখের উপর শসার টুকরো দিয়ে রাখেন। এতে করে শসায় থাকা প্রদাহনাশক উপাদান চোখের ফোলা ভাব দূর করতে পারে। এ ছাড়া এতে জলীয় অংশ বেশি থাকায় চোখের শুষ্ক ভাব দূর করে।

চোখে শসা দিলে কি হয়

আপনাদের মধ্যে অনেকেই চোখে শসা ব্যবহার করতে চান? কিন্তু চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে জানেন না। রাত জাগা, স্ট্রেস এমনকি খাদ্যাভাসের কারণে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দিতে পারে, যাকে আমরা ডার্ক সার্কেল বলি। নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা যায়। শসা যেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী তেমনি ভাবে চোখের কালো দাগ দূর করার জন্য বেশ উপকারী।
কারণ শসার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ থাকে। যার ফলে আমরা খুব সহজেই চোখের নিজের কালো দাগ দূর করতে পারি। চোখের ফোলা ভাব দূর করার ক্ষেত্রেও শসা বেশ উপকারী। শসায় প্রায় ৯০% পানি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে রয়েছে, যা ত্বককে নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।

এ ছাড়া ত্বকের পানি শূন্যতা দূর করতে এই উপাদান বেশ কার্যকর। ত্বকের চুলকানি ও অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত শসার রস ব্যবহার করতে পারেন। চোখে শসা দিলে কি হয় ইতিমধ্যে এ সম্পর্কে আপনারা আংশিক ভাবে জানতে পারলেন। এ পুরো আর্টিকেলটিতে আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানবো।

চোখে শসা ব্যবহার করার উপকার

আমাদের শরীরের জন্য শসা খুব উপকার। আর চোখের জন্য শসা অনেক কার্যকর উপাদান। শসায় অনেক দরকারি ভিটামিন ও খনিজ থাকে। চোখে শসা ব্যবহার করার ফলে চোখের ফোলা ভাব দূর করা যায়। শসায় জলীয় অংশ বেশি থাকায় চোখের শুষ্ক ভাব দূর করে। চোখের ক্লান্তি দূর করে এবং সতেজ ভাব আনতে সাহায্য করে।
চোখে শসা ব্যবহার করার ৫টি উপকার:
  1. শসায় আছে অ্যাসকরবিক ও ক্যাফেইক অ্যাসিড, যা চোখে চারপাশে ফোলা ভাব কমায়। শসা কেটে আগে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এটি ব্যবহারে চোখে বিশ্রাম পাবেন। মিলবে চোখের আর্দ্রতা।
  2. শসার জুসে আছে ফাইটোকেমিক্যাল যা কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন হচ্ছে আঁশের মতো এক ধরনের প্রোটিন, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতার জন্য দায়ী এবং এটি সেলুলাইট দূর করে।
  3. শসায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সিলিকা, যা ত্বকের ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে। শসা ব্যবহারে এই কালো দাগ সামরিক দূর হলেও এটি স্থায়ী সমাধান নয়। তবে চোখের চারপাশে কালো দাগ আস্তে আস্তে হালকা করে শসা। শসা মুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ।
  4. শসা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। চোখের চারপাশে যে চামড়া থাকে, তা পুরো শরীরের মধ্যে সবচেয়ে পাতলা। চোখের চারপাশে শসা দিয়ে রাখলে এই ত্বক আর্দ্র হয়। এতে ত্বক কুঁচকে যাওয়া বা বলিরেখা দূর হয়।
  5. চোখের নিচে চামড়া ঝুলে পড়া ঠেকাতে সাহায্য করে শসা। শসার পেস্ট বানিয়ে তাতে মধু, ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে চোখের নিচে হালকা করে লাগিয়ে রাখতে হবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। পরে ভেজা কাপড় দিয়ে তা মুছে ফেলতে হবে। এতে চোখ ফোলা ভাব কমবে।

শসা ব্যবহার করার অপকারিতা

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি চোখে শসা দিলে কি হয় এই ব্যাপারে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক শসা ব্যবহার করার অপকারিতা সম্পর্কে। শসা হচ্ছে, একটি লো ক্যালরি বা খুব কম ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। শসার মধ্যে পানির পরিমাণ অনেক। ১০০ গ্রাম শসা তে পানির পরিমাণ ৯৪.৯ গ্রাম এবং ২২ কিলো ক্যালরি এছাড়াও শসা একটি ভালো মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার। শসাতে কিছু পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল এবং আঁশ থাকে। কিন্তু ভালো একটি খাবার শসাও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যায় যখন কেউ মনে করে শুধুমাত্র শসা খেয়ে ওজন কমানো যায়।
শসাকে একমাত্র ওজন কমানোর ওষুধ মনে করে। আমরা ডাইটেশিয়ানরা ডায়েট চার্টে শসাটা রাখি। কিন্তু শুধু শসা খেয়ে আমরা ওজন কমাতে বলি না। কিন্তু অনেকেই ওজন কমানোর জন্য শসাকে ওষুধ হিসেবে ধরে নিয়ে সারাদিন ধরে শসা খেয়ে থাকে। যখনই ক্ষুধা লাগে শসা খেতে শুরু করে।

যেহেতু শসা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শসা কেন অন্য যেকোনো কম ক্যালরিযুক্ত খাবার একনাগাড়ে খেতে থাকলে ওজন কমে যাবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আপনার শরীরে দেখা দেবে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি। অন্য খাবার কম খেয়ে সারাদিন অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেতে থাকলে বা ক্ষুধা লাগলেই শসা খেলে বদহজম, গ্যাসের সমস্যা সহ পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।

প্রায় এক মাস ধরে ওজন কমাতে সারাক্ষণ শসা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করায় শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও রক্তে গ্লকোজের অভাবে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার মত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে।

ত্বকের যত্নে শসা ব্যবহারের নিয়ম

চোখে শসা দিলে কি হয় এই সম্পর্কে জানার পাশে পাশে অনেকেই জানতে চায় ত্বকের যত্নে শসা ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে চলুন এই ব্যাপারে এবার বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহার অনেক আগে থেকে প্রচলিত। সতেজ ত্বকের জন্য যে শসা একটি অপরিহার্য নাম তার সবারই জানা। তবে রূপচর্চার জন্য শসার সঠিক ব্যবহারের পদ্ধতি হয়তো অনেকের জানা নেই।

চলুন জেনে নেওয়া যাক ত্বকের যত্নে শসার ব্যবহারের নিয়ম:
  1. মুখে কোন কালো দাগ পড়লে কচি শসার রস মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেবেন। এভাবে কিছুদিন নিয়মিত লাগালে দাগ উঠে যায়।
  2. শসার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মুখে মেখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিলে মুখের রং উজ্জ্বল ও কোমল হয়। তবে নিয়মিত কিছুদিন করতে হবে।
  3. অনেক সময় দেখা যায় চোখের নিচে অনেকেরই কালো দাগ পড়ে। শসার রস নিয়মিত মাখলে এ দাগ দূর হবে।
  4. যদি কেউ ফর্সা হতে চান তবে নিয়মিত শসার রসের সাথে কয়েকফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে, হাতে ও গায়ে নিয়মিত মাখলে গায়ের রং ফর্সা হয় অথবা শসা পাতলা পাতলা করে কেটে মুখে ঘষে নিতে পারেন। পরে শুকোলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেবেন।
  5. মুখকে রোদ থেকে বাঁচাতে, মুখের দাগ তুলতে ও ময়লা থেকে যদি রেহাই পেতে চান তবে শসার সাহায্যে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে ২৫/৩০ মিনিট রেখে প্রথমে গরম পানি, পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে আপনি নিশ্চিন্তে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেন। এতে ত্বক সারা দিনের জন্য যেমন চকচকে, মসৃণ ও কোমল থাকবে তেমনি বাইরের নানান জীবাণু থেকে ত্বক রেহাই পাবে।

উপসংহার

শসা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী আবার অপকারী। কিন্তু আমাদের চোখের নিচে অনেক সময় কালো দাগ দেখা যায় যাকে আমরা ডার্ক সার্কেল বলি। আর এই ডার্ক সার্কেল মুক্ত করতে পারে শসা।

শসার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই ডার্ক সার্কেল মুক্ত করতে পারি খুব সহজে। অনেক সময় দেখা যায় রাত জাগার ফলে আমাদের চোখ ফুলে যায় বা কালো দাগ পড়ে। শসার ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই চোখের ফোলা ও কালো দাগ দূর করতে পারি। শসাই অনেক ভিটামিন আছে যার মাধ্যমে আমরা কালো দাগ দূর করতে পারি।

আশা করি আপনারা আজকের আর্টিকেল পড়ে বুঝতে পারবেন চোখে শসা দিলে কি হয় এ সম্পর্কে। এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট অর্ডিনারি আইটি ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২৪১৪২

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url