পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি সে সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি
- পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি
- কিভাবে বুঝবেন আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে
- পারকিনসন রোগ কি কারণে হয়
- পারকিনসন রোগের চিকিৎসা
- শেষ কথা
পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি
পারকিনসন হচ্ছে স্নায়ুর একটা জটিল রোগ। এ রোগের কারণে ব্রেনের আংশিক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়। পারকিনসনিজমকে রোগ না বলে বলা যেতে পারে সহ লক্ষণ সমষ্টি। পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি তা নিচে দেয়া হল।
- পারকিনসন রোগের লক্ষণ হচ্ছে হাঁটু ভাঁজ করে বসতে না পারা ও মাটি পর্যন্ত পায়ের গোড়ালি পৌঁছতে না পারা।
- চলার সময় হাত নড়ে না, শরীরের সাথে থাকে।
- মাংসপেশি শক্ত হতে থাকে এবং রোগী আস্তে আস্তে হাটে, কখনো আবার থেমে যায়।
- শরীর ও হাত-পা কাঁপতে দেখা যায় এবং মাথা ও অনেক সময় কাঁপে।
- খাবার গিলতে সমস্যা হয় এবং প্রসাব অনিয়ন্ত্রিত ভাবে হয়।
- যৌন ক্ষমতা হারাতে থাকে।
- ঘুম কখনো বেশি আবার কখনো মোটেও ঘুম না হবার লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
- ঘ্রাণশক্তি কমতে থাকে।
- চামড়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যর বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
- শরীরের ভারসাম্য আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাওয়া।
- স্মৃতিশক্তি আস্তে আস্তে কমতে থাকে। ভুলে যাবার প্রবণতা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।
- নিজের ভেতরে অসম্ভব বিষন্নতা, উদ্যোগ ও অবসাদ জন্ম নিতে থাকে।
- গলার স্বরের পরিবর্তন হতে থাকে। যেমন-গলার স্বর ক্রমশ ক্ষীণ ও ভারী হতে থাকে।
- হাঁটা চলাতে ক্রমশ ধীরগতি হতে থাকে এবং জড়তা দেখা দিতে থাকে।
কিভাবে বুঝবেন আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে
আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে কিনা সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করবার জন্য নির্দিষ্ট কোন পরীক্ষা নেই। এটা শুধুমাত্র চিকিৎসা ইতিহাস, উপসর্গ এবং লক্ষণগুলোর উপর নির্ভর করে কিংবা স্নায়ু বিশেষজ্ঞ অস্থায়ীভাবে যাচাই করবে যে আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে কি না। এছাড়াও তিনি একটা শারীরিক ও স্নায়বিক পরীক্ষা করা লাগবে।
তাছাড়া পারকিনসন রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে। যদিও লক্ষণগুলো সম্পূর্ণ শনাক্ত করা অনেক কঠিন। তবে ছোট পরিবর্তনগুলো যা প্রাথমিক পর্যায়ে অবস্থায় নির্ণয় করতে সাহায্য করে থাকে। এই পরিবর্তনগুলো হচ্ছে-
- ব্যায়ামের পরে কিংবা কিছু ওষুধ খাওয়ার পরে শরীরে একটু কাপুনিকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়ে থাকে, আঙ্গুল, হাত কিংবা চিবুতে সামান্য ধরনের কাঁপুনি প্রাথমিক একটা লক্ষণ হতে পারে।
- রাতে বিছানায় ঘোড়ানো, বাঁকানো এবং গভীর ঘুম না হওয়াও একটা অন্যতম লক্ষণ।
- বিভিন্ন ধরনের খাবারের গন্ধে বাদ নেয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়া।
- মুখের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যাবার কারণে মুখের অভিব্যক্তিগুলো হতাশ হয়ে থাকে কিংবা মন খারাপ মনে হয় যদিও মানসিক অবস্থা ভালো থাকার পরেও।
- সময়ের সাথে হাতের লেখা পরিবর্তিত হতে থাকে এবং আগের তুলনায় হতে থাকে।
পারকিনসন রোগ কি কারণে হয় | পারকিনসন রোগ কেন হয়
এখন আমরা আলোচনা করব পারকিনসন রোগ কি কারনে হয় বা পারকিনসন রোগ কেন হয় সে সম্পর্কে। আসলে পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি তা আমরা উপরে বিস্তারিতভাবে জেনে এসেছি। এখন জানবো পারকিনসন রোগটা আসলে কি কারনে হয়ে থাকে। আসলে পারকিনসন রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে মস্তিষ্কের সাদা অংশের ভেতরে অবস্থিত ভৌমিক গ্রন্থির আঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি। এছাড়াও এই রোগ হয়ে থাকে গুরু মস্তিষ্কের টিউমার, ম্যাঙ্গানিজ কিংবা কপার বিষ ইত্যাদির কারণে।
আরো পড়ুনঃ যে কয়টি সহজ উপায়ে মুখের কালো ব্রণের দাগ দূর করবেন
পারকিনসন হচ্ছে মস্তিষ্কের এক ধরনের বিশেষ রোগ। বর্তমান দিনে মরণ ব্যাধি গুলোর মধ্যে এটা একটা ভয়াবহ রোগ। মূলত এই রোগটা স্নায়ু বা নিউরোড ডিজেনারেটিভ এর অধঃপতন জনিত রোগ। একটা সমীক্ষা অনুসারে, সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে 10 মিলিয়ন মানুষ। আর কয়েক হাজার মানুষ এই রোগে মারা গেছেন।
পারকিনসন রোগের চিকিৎসা
এই রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করার সঠিক কোন প্রক্রিয়া এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, এই রোগের ভ্যাকসিন ডাবলিনের United neuroscience নামে একটা সংস্থা আবিষ্কারের সক্ষম হয়েছেন। ২৪ জন রোগীর উপরে পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়ে থাকে এবং তা সফলতা পায়। এছাড়াও আরেকটা UB- 312 নামের ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করা শুরু হয়েছে। তবে পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁটাচলার সমস্যাকে দূর করার জন্য ভ্যাকসিন ছাড়াও স্টেম সেল রিপ্লেসমেন্ট এর মাধ্যমে ও চিকিৎসা নেওয়ার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা ইমার্জেন্সি পিল কি
কেননা, ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণকারী কোষের মৃত্যু এই রোগে হয়ে থাকে এবং অঙ্গ সঞ্চালনের অক্ষমতা ও দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়াও যে পদ্ধতিগুলো আছে, যেমন-ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ওষুধের সাহায্য নিয়ে কিছুটা সুস্থ থাকা যেতে পারে ও রোগটির অবস্থা বাড়তে দেখা গেলে অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে সাময়িকভাবে ভালো থাকা যেতে পারে। এমনকি এই রোগ ফিজিওথেরাপির সাহায্য নিয়ে ও কিছুটা ভালো করা যেতে পারে।
শেষ কথাঃ পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি
পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি কিভাবে বুঝবেন আপনার পারকিনসন রোগ হয়েছে সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই পারকিনসন রোগের লক্ষণগুলো কি কি সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬