আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে যদি আপনারা জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনেকেই আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি সম্পর্কে জানতে চাই। চলুন তাহলে আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি সে সব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেরই আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগ হয়ে থাকে। আর এজন্যই আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়লে আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে এবার আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি

ভূমিকা

ঘন ঘন পাতলা পায়খানা কিংবা পায়খানার সঙ্গে রক্ত দেওয়ার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। দীর্ঘদিন এই রোগ শরীরে বয়ে বেড়ালে স্বাস্থ্য দুর্বল হতে থাকে। সঠিক চিকিৎসা নিয়ে এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। এই ধরনের লক্ষণকে আলসারেটিভ কোলাইটিস বলা হয়। আলসারেটিভ কোলাইটিস উপমহাদেশের জনগণের মধ্যে তেমন একটি দেখা যেত না। বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোর খাদ্যাভাস ও সাংস্কৃতিক অনুসরণের ফলে আমাদের দেশের জনগণের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে আলসারেটিভ কোলাইটিস।

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগটি সাধারণত ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মাঝারি লোকজনের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই, কারণ আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে জানলে তারা এই রোগটি থেকে বাঁচার উপায়সমূহ জানতে পারবে বা প্রতিরোধ করতে পারবে। চলুন তাহলে আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে ধাপে ধাপে আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক।

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি

আলসারেটিভ কোলাইটিস ঠিক কাদের হয় তার কারণ সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে কেউ কেউ মনে করেন কোলনের অন্তগাত্রের আবরণ যদি দুর্বল হয় তবে এ রোগ হতে পারে। কেউ যদি খুবই দুশ্চিন্তায় ভোগে, দুধ কিংবা দুধ জাতীয় খাবার খায় অথবা আমাশয় ভোগে আলসারেটিভ কোলাইটিসের উপসর্গ গুলো বারবার দেখা দিতে পারে।
আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি-
  1. ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়া।
  2. পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
  3. অনেক সময় এমনিতেই মলদ্বার দিয়ে মিউকাস কিংবা আমজাতীয় পদার্থ বের হওয়া।
  4. তলপেটে মোচর দেয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রচন্ড পায়খানার বেগ অনুভব হওয়া।
  5. সময় মতো বাথরুমে যেতে না পারলে পেটে অনেক ব্যথা হওয়া।
  6. পায়খানা হয়ে কাপড় নষ্ট হতে পারে।
  7. ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও রক্ত যাওয়ার ফলে রোগীর পানি, লবণ এবং রক্ত শূন্যতা দেখা দেওয়া ইত্যাদি।

কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগে আক্রান্ত

সাধারণত ঘন ঘন পায়খানা হওয়ার লক্ষণকে বলা হয় আলসারেটিভ কোলাইটিস।আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সাধারণত আলফারেটিভ কোলাইটিস যদি ইনফেকশন থেকে হয় তাহলে কিছুদিন এন্টিবায়োটিক খেলে ঠিক হয়ে যায়।
কি কি লক্ষণে বুঝবেন আপনি আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগে আক্রান্ত-
  1. বারবার পেট খারাপ হওয়া।
  2. মলের সঙ্গে রক্ত পড়া।
  3. পেটে ব্যথা।
  4. মলদ্বারে ব্যথা।
  5. শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া।
  6. ঘনঘন পায়খানা হওয়া।
  7. জ্বর।
  8. মুখে ঘা।
  9. বেদনাদায়ক লাল চোখ।
  10. লিভারের রোগ।
  11. শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধির অভাব।
  12. ত্বকের ফুসকুড়ি।

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের কারণ

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ভাইরাস বা পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট আক্রমণ। ব্যাকটেরিয়ার কারণে ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে। আলসারেটিভ কোলাইটিসের কারণ অজানা এ অবস্থার মানুষদের তাদের ইমিউন সিস্টেমের সাথে সমস্যা আছে। তবে ইমিউন সমস্যা এই অসুস্থতার কারণ কি না তাই স্পষ্ট নয়। স্ট্রেস এবং কিছু খাবার লক্ষণ গুলিকে ট্রিগার করতে পারে। তবে তারা আলসারেটিভ কলাইটিস রোগ সৃষ্টি করে না। আলসারেটিভ কোলাইটিস যেকোনো বয়সের গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করতে পারে। ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সে এবং তারপর আবার ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সের শিকার হয়েছে। রোগটি রেকটাল এলাকায় শুরু হয়। এটি মলদ্বারে থাকতে পারে বা বড় অন্তের উচ্চতর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের চিকিৎসা

সাধারণত আলসারেটিভ কোলাইটিস যদি ইনফেকশন থেকে হয় তাহলে কিছুদিন এন্টি খেলে ঠিক হয়ে যায়। কেউ যদি সুগারের পেশেন্ট হয় তাহলে এই রোগে তাকে ঔষধ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক নিষেধ মেনে চলতে হয়। তবে আলসারেটিভ কোলাইটিস করে তাহলে এর চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত স্টেরয়েড এবং সালফাস্যালাজিন দেওয়া হয়। কাম মাত্রায় এই স্টেরয়েড দেওয়া হয়। তবে কারোর ক্ষেত্রে যদি এগুলো কাজ না করে তখন এই রোগ সারানোর শেষ অস্ত্র হিসেবে অপারেশন কে বেছে নিতে হয়। এক্ষেত্রে কোলন বা পুরো বৃহদন্ত্রই কেটে বাদ দেওয়া হয়।
সময়মতো চিকিৎসা না করালে এক্ষেত্রে আরো খারাপ কিছু হতে পারে। পুরোটা ঠিক না করা গেলেও আবার কিছু কিছু জিনিস মেনে চললে এরম অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়ে ওঠে এর জন্য উল্লেখযোগ্য হল আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগীদের জন্য হলুদ অনেক কার্যকারী। আবার অনেকের এই রোগ বৃদ্ধি করে স্ট্রেসের মাধ্যমে তাই স্ট্রেস কমাতে হবে।

আলসারেটিভ কোলাইটিস কি ধরনের রোগ

আলসারেটিভ কোলাইটিস একটি অটোইমিউন অসুখ। এই রোগে শরীরে নিজের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই অন্তকে আক্রমণ করে। আলসারেটিভ কোলাইটিস হল একধরনের ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ যেখানে অন্ত্রের আস্তরণ ফুলে যায়। এর ফলে দীর্ঘ সময় ধরে পাচনতন্ত্রের মধ্যে জ্বালা এবং আলসার সৃষ্টি হতে পারে। আলসারেটিভ কোলাইটিস লক্ষণ গুলি ধীরে ধীরে বিকশিত হয় কিছু ক্ষেত্রে এ রোগের গুরুত্ব জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। স্ট্রেস এবং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার সময় ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচিত হত কিন্তু পরে ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন যে এই অবস্থা গুলি আলসারেটিভ কোলাইটিসকে বাড়িয়ে তুলতে পারে কিন্তু এগুলি একমাত্র কারণ নয়।

আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগের উপসর্গ কি এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে। আর্টিকেল পড়ে যদি আপনার উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে সবার মাঝে শেয়ার করতে পারেন এবং তাদেরকেও পড়া সুযোগ করে দিতে পারে। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২৪১৪২

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url