কি কি কারণে পা ফাটে - পা ফাটা রোগের নাম কি

কি কি কারণে পা ফাটে? সে বিষয়গুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো আশা করি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তাই কি কি কারণে পা ফাটে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। চলুন দেখে নিই কি কি কারণে পা ফাটে? 

পেজ সূচিপত্র: কি কি কারণে পা ফাটে - পা ফাটা রোগের নাম কি

কি কি কারণে পা ফাটে

পা ফাটার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আপনি যদি সেই কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে রাখেন তাহলে খুব সহজেই পা ফাটার মত সমস্যা দূর করতে পারবেন। পা ফাটার কারণগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। আসুন দেখে নেয়া যাক, কি কি কারণে পা ফাটে? 
  • দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে: আপনাকে যদি কর্ম ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সেক্ষেত্রে পা ফাটার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের গোড়ালিতে চাপ পড়ে যার ফলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • মুটিয়ে যাওয়ার কারণে: আপনি যদি মুটিয়ে যান তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে, আর অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন বৃদ্ধি পেলে আপনার পায়ের গোড়ালির উপরে চাপ পড়বে এর ফলে পা ফেটে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • টাইপ ফিটিং জুতা ব্যবহার করলে:  আপনি যদি টাইট ফিটিং জুতা পরিধান করেন তাহলে  পা চাপের মধ্যে থাকবে এই কারণে পায়ের গোড়ালি ফেটে যেতে পারে। তাই টাইট ফিটিং জুতা পরিহার করতে হবে।
  • জুতার পেছনদিকের সাথে পায়ের ক্রমাগত ঘর্ষণের কারণে: জুতার পিছনের অংশের সাথে যদি আপনার পা ক্রমাগতভাবে ঘর্ষণ খায় সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে: শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কম থাকে এবং পরিবেশ শুষ্ক থাকে এর ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। পায়ের গোড়ালির ত্বক শুষ্ক হওয়ার কারণে অনেক সময় ফেটে যায়। 
  • সেন্ডেল ব্যবহার করলে: আপনি যদি স্যান্ডেল ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে পায়ে ধুলাবালি লাগে এবং তার সর্বদাই অপরিষ্কার থাকে এর ফলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যেতে পারে। তাই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্যান্ডেল পরিহার করা থেকে বিরত থাকুন। এবং সম্পূর্ণ পা ঢেকে থাকে এ ধরনের জুতা ব্যবহার করুন। 

পা ফাটা রোগের নাম কি

ফাটা খুবই কমন একটি রোগ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। যাই হোক, আপনি যদি জানতে চান যে, পা ফাটা রোগের নাম কি? তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি আপনাকে মনোযোগের সাথে পড়তে হবে। কেননা নিচে পা ফাটা রোগের নাম কি? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর তুলে ধরা হবে। 
পা ফেটে গেলে আমরা সেই রোগকে পা ফাটা হিসেবে উল্লেখ করে থাকি। তবে পা ফাটা রোগের বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে। পা ফাটা রোগের বৈজ্ঞানিক নাম হলো "হিল ফিসার" অথবা "ক্র্যাক্ট হিলস"। পা ফাটা রোগের নাম কি, আশা করি তা জানতে পারলেন। 

পা ফেটে গেলে কি করবেন - পা ফাটলে করনীয় কি

কি কি কারণে পা ফাটে, সে বিষয়গুলো সম্পর্কে ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পা ফেটে গেলে করণীয় কি সেই বিষয় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে। যদি কোন কারনে কখনো পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করতে হবে। নিচে উল্লেখিত কাজগুলো যথাযথভাবে করতে পারলে আশা করা যায় পা ফাটা রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, পা ফেটে গেলে কি করবেন বা পা ফাটলে করনীয় কি? 
  • ঘুমানোর পূর্বে পায়ে পেট্রোলিয়াম জেল ব্যবহার করুন: আপনি যদি পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান সেক্ষেত্রে ঘুমানোর পূর্বে নিয়মিত কিছুদিন আপনাকে পেট্রোলিয়াম জেল ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত কিছুদিন যদি আপনি পায়ে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করেন তাহলে আশা করা যায় পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার  সমস্যা দূর হয়ে যাবে। 
  • দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করা বন্ধ করুন: দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করলে পায়ের পাতা নরম হয়ে যায় এর ফলে তা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে গরম পানি দিয়ে যদি আপনি দীর্ঘ সময় গোসল করেন তাহলে কিন্তু এই ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
  • গোসল করার ৫ মিনিটের মধ্যে ময়েশচারাইজার ব্যবহার করুন: গোসল করার ৫ মিনিটের মধ্যেই পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার পা ফেটে যাওয়ার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • মোজা ব্যবহার করুন: পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মোজা ব্যবহার করতে পারেন। পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করার পরে মোজা পরিধান করে থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই পা ফাটার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। বিশেষ করে শীতকালে মোজা ব্যবহার করলে আপনার পা দীর্ঘ সময় আদ্র থাকবে যার ফলে পা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। 
  • স্যান্ডেল ব্যবহার করা পরিহার করুন: স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পায়ে ধুলাবালি সহ নানা ধরনের রোগ জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে তাই পা ফাটা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে সেন্ডেল পরিহার করতে হবে। এছাড়া স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পায়ের গোড়ালির উপরেও অধিক চাপ পড়ে তাই সেন্ডেল পরিহার করে চলতে হবে। 

যেসব কারণে পায়ের গোড়ালি ফাটে

কি কি কারণে পা ফাটে, সে বিষয়গুলো সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেসব কারণে পায়ের গোড়ালি ফাটে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে নিচে আরো কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো। তাই আপনি যদি যেসব কারণে পায়ের গোড়ালি ফাটে, সেই বিষয় সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। 
  • গরম পানি দিয়ে গোসল করা: অনেকেই শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পছন্দ করে। গরম পানি দিয়ে গোসল করলে তা পায়ের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আপনি যদি পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে দীর্ঘ সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  • খালি পায়ে হাঁটাচলা করা: খালি পায়ে হাঁটাচলা করলে পায়ের উপরে অধিক চাপ পড়ে যার ফলে পায়ের গোড়ালি ফেটে যেতে পারে। তাই পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি বন্ধ করুন। 
  • ঠান্ডা আবহাওয়া: ঠান্ডা আবহাওয়া বাতাস শুষ্ক থাকে যার ফলে পা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পায়ে ঘন ঘন পেট্রোলিয়াম জেল ব্যবহার করুন। ঘন ঘন পেট্রোলিয়াম জেল ব্যবহার করলে আপনার পা আদ্রা থাকবে যার ফলে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ক্লিনজার বা সাবান ব্যবহার করা: আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ক্লিনজার বা ক্ষার জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে তার পায়ের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ এবং সাবান জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে যদি সাবান কিংবা ক্ষার জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে তা আপনার পায়ের গোড়ালির ত্বক  শুষ্ক করে দিবে যার ফলে পা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

শেষ কথা

কি কি কারণে পা ফাটে, পা ফাটার লক্ষণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে আশা করি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। কেননা এই আর্টিকেলটিতে পা ফাটা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উপকৃত হতে পারবেন। উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেি আপনি পা ফাটার মত সমস্যা দূর করতে পারেন। ১৬৪১৩ 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url