আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে? তা জেনে রাখলে, আপনি দান করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে? তা যদি আপনি না জানেন তাহলে সঠিক নিয়মে দান করতে পারবেন না। যাইহোক আসুন জেনে নেয়া যাক, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে?

পেজ সূচিপত্র: আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে

উপস্থাপনা 

আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের করার যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি মাধ্যম হলো নিজের হালাল সম্পদ থেকে দান করা। আল্লাহর দেয়া সম্পর্কে যখন আপনি আল্লাহর রাস্তায় খরচ করবেন, তখন আল্লাহ তা'আলা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। সদকা করার মাধ্যমে আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। 

এবং দান-সদকা করলে সম্ভাব্য বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, আপনি যদি দান সদকা করেন তাহলে আল্লাহতালা আপনার সম্পদ বৃদ্ধি করে দেবেন, আপনার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন। যাইহোক দান করার অনেক ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে? সেই বিষয় সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। 

দান কত প্রকার ও কি কি

ইসলামের দৃষ্টিতে দান সাধারণত দুই প্রকার। একটি হলো বাধ্যতামূলক দান। যেমন যাকাত একটি বাধ্যতামূলক দান। আপনার যদি নেসাব পরিমান সম্পদ থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে যাকাত প্রদান করতে হবে। আপনি যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার পরেও ২.৫% হারে যাকাত প্রদান না করেন তাহলে কিন্তু আপনি কবিরা গুনাহগার হবেন। 

সুতরাং যাকাত হলো একটি ঐ বাধ্যতামূলক দান। আর অপরটি হল ঐচ্ছিক দান। ঐচ্ছিক দানের ধরাবাঁধা কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। বছরের যে কোন সময় যতটুকু ইচ্ছা দান করা যায়। ঐচ্ছিক দানের মধ্যে অনেকগুলো দান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেমন সাধারণ সদকা। আপনি যদি কোন অভাবগ্রস্ত মানুষকে কিছু সম্পদ দান করেন তাহলে এটা হবে ঐচ্ছিক দান।
কোন ব্যক্তি যদি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় থাকে তাকে যদি আপনি টাকা পয়সা সহায়তা করে সেই ঋণ থেকে মুক্ত করেন সেটা হবে একটি ঐচ্ছিক দান। কেননা এই দান করার ব্যাপারে আপনি বাধ্য নন। আর এ কারণেই ঐচ্ছিক দান করলে আল্লাহতালা সন্তুষ্ট হয়ে যান। আপনি যদি আপনার সম্পদ থেকে কিছু সম্পদ গরিব দুঃখীদের কে দান করেন তাহলে আল্লাহতায়ালা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে। যাই হোক, দান কত প্রকার ও কি কি তা নিচে লিস্ট আকারে তুলে ধরা হলো। 

দান মোট দুই প্রকার:
  • বাধ্যতামূলক দান।
  • ঐচ্ছিক দান।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাইলে দান করার ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আল্লাহ শুধুমাত্র হালাল সম্পদ থেকে দান গ্রহণ করেন। আপনি যদি হারাম সম্পদ থেকে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে দান করেন তাহলে কখনোই তা আল্লাহর নিকটে গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই আপনি যদি দান করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সম্পদ হালাল পথে উপার্জন করতে হবে। 
হালাল পথে সম্পদ উপার্জন করার পরে সেই সম্পদে যখন আপনি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবেন তখন আল্লাহ তাআলা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। গরিব দুঃখীকে করলে আল্লাহতালা সন্তুষ্ট হন। আপনার আশেপাশে যারা রয়েছে তাদের মধ্যে যদি কোন অভুক্ত ব্যক্তি থাকে তাহলে আপনার উচিত হবে তাদেরকে খাদ্য দান করা। যদি কোন অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি থেকে থাকে তাহলে তার অভাব পূরণ করার জন্য কিছু সম্পদ দান করা আপনার কর্তব্য।

দান করার উপকারিতা

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে? সেই বিষয়ে সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে এখানে দান করার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। দান করলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়। আপনি যদি আপনার সম্পদ থেকে কিছু অংশ দান করে দেন তাহলে দুনিয়াতেও এর উপকারিতা পাবেন এবং আখেরাতে পাবেন এর প্রতিদান। 

দান করলে সাধারণত যে সকল উপকারিতা পাওয়া যায় সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি দান করার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলের এই অংশটি পড়লে আশা করা যায় আপনি দান করার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 
  • আকস্মিক মৃত্যু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়: আপনি যদি আপনার সম্পদ থেকে কিছু সম্পদ দান করেন তাহলে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে আকস্মিক মৃত্যু এবং কষ্টদায়ক রোগ থেকে মুক্ত রাখবেন। সদকা করলে সম্ভাব্য বিপদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর তাই আপনি যদি বিপদ আপদ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে চান তাহলে বেশি বেশি দান করুন। 
  • সম্পদ বৃদ্ধি পায়: দান করলে সম্পাদক কমে যায় না, বরং বৃদ্ধি পায়। তাই আপনি যদি আপনার সম্পদ বৃদ্ধি করতে চান সে ক্ষেত্রে আল্লাহর রাস্তায় দান করুন। আল্লাহর রাস্তায় দান করলে সম্পদে বরকত হয় আর এ কারণেই সম্পদ বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর রাস্তায় দান করলে শুধু ইহকালে সম্পদ বৃদ্ধি পাবে এমনটি নয়, বরং আল্লাহর রাস্তায় দান করলে আপনি পরকালেও এর প্রতিদান পাবেন। কেননা আপনি যা দান করেন তা আল্লাহ তায়ালা লালন পালন করেন এবং তা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে। 
  • আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়: ধন-সম্পদ দান করলে আল্লাহ তাআলার নিকট্য লাভ করা যায়। আপনি যদি আল্লাহর রাস্তায় খালেস দিলে আপনার সম্পদ থেকে কিছু সম্পদ দান করে দেন তাহলে আল্লাহ তা'আলা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার নিকট লাভ করার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো আল্লাহর রাস্তায় ধন-সম্পদ দান করা। 
  • কুপ্রবৃত্তি দমন হয়: আপনি যখন নিঃস্বার্থভাবে আপনার সম্পদ থেকে কিছু সম্পদ দান করবেন তখন কুপ্রবৃত্তি এবং লালসা দূর হয়ে যাবে। এবং আপনার নফস পরিষ্কার হবে। তাই আপনি যদি কুপ্রবৃত্তি দমন করে এবং লালসা দূর করে নফস পরিষ্কার করতে চান তাহলে আপনার উচিত হবে গরিব-দুঃখীকে দান করা।
  • ফেরেশতাদের কাছে সম্মান পাওয়া যায়: যখন কোন ব্যক্তি তার সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় করে তখন আল্লাহতালা তাকে পছন্দ করেন। আর আল্লাহতালা যাকে পছন্দ করেন তার সম্পর্কে তিনি ফেরেশতাদেরকে বলেন যে আমি ওই ব্যক্তিকে ভালোবাসি তোমরাও তাকে ভালোবাসো। এভাবে দান করার মাধ্যমে ফেরেশতাদের কাছেও সম্মান অর্জন করা যায়। 
  • জান্নাত লাভ করা যায়: সর্বোপরি ধন-সম্পদ দান করলে জান্নাত লাভ করা যায়। আপনি যদি সম্পদ দান করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই মহান আল্লাহতালা আপনাকে নিজ অনুগ্রহে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাই আপনি যদি আল্লাহর অনুগ্রহে জান্নাতে প্রবেশ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বেশি বেশি দান সদকা করতে হবে।

উপসংহার

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে হলে কিভাবে দান করতে হবে? আশা করি সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। কেননা দান করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার যাবতীয় পদ্ধতি সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আপনাদের জীবনে অনেক উপকারে আসবে। চাইলে আপনি দান সদকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ১৬৪১৩

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url